খনিজ লবণ বা ধাতব লবণ (পাঠ ৫)

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - গার্হস্থ্যবিজ্ঞান খাদ্য, পুষ্টি ও স্বাস্থ্য | - | NCTB BOOK
269
269

শরীর গঠনে প্রোটিনের পরই মিনারেলস বা খনিজ পদার্থ বা ধাতব লবণের স্থান। দেহের উপাদানের শতকরা প্রায় ৯৬ ভাগ জৈব পদার্থ এবং ৪ ভাগ অজৈব পদার্থ বা খনিজ পদার্থ। দেহে প্রায় ২৪ প্রকার বিভিন্ন খনিজ পদার্থ রয়েছে। ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাসিয়াম, সোডিয়াম, ক্লোরিন, ম্যাগনেশিয়াম, লৌহ, ম্যাঙ্গানিজ, তাম্র, আয়োডিন, জিংক, অ্যালুমিনিয়াম, নিকেল ইত্যাদি খনিজ পদার্থ দেহের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য এগুলো খাদ্যের মাধ্যমে গ্রহণ করতে হয়। দীর্ঘদিন খনিজ লবণের ঘাটতিতে নানা প্রকারের অভাবজনিত রোগ দেখা দেয়। খাদ্যের মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় ধাতব লবণ পেয়ে থাকি।

শ্রেণি বিভাগ- পরিমাণের মাপকাঠিতে এদের ২ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

(১) প্রধান খনিজ লবণ- অজৈব পদার্থের মধ্যে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও গন্ধক প্রাণী দেহে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অবস্থান করে। এদের প্রধান খনিজ লবণ বলে।

(২) লেশ মৌল খনিজ লবণ- লৌহ, আয়োডিন, ক্লোরিন, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, তাম্র, কোবাল্ট, মলিবডেনাম ইত্যাদি খুব সামান্য পরিমাণ দেহের পুষ্টি কাজে অংশ নেয় বলে এসব মৌলকে লেশ মৌল খনিজ লবণ বলা হয়। কিন্তু এগুলো খুব সামান্য পরিমাণে প্রয়োজন হলেও এদের কাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

খনিজ লবণের বিভিন্ন খাদ্য উৎস

খনিজ লবণসমৃদ্ধ খাদ্য

প্রাণিজ উৎস- সামুদ্রিক মাছ, কাঁটাসহ ছোট মাছ, ডিমের-কুসুম, মাংস, যকৃৎ, পনির, দুধ ও দুধ জাতীয় খাদ্য।

উদ্ভিজ্জ উৎস- বিভিন্ন ধরনের সবুজ সবজি ও ফল, ঢেঁকিছাঁটা চাল, বিভিন্ন ধরনের ডাল, মিষ্টি আলু ইত্যাদি।

ধাতব লবণ বা খনিজ পদার্থের কাজ- আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় খনিজ লবণ সমৃদ্ধ খাদ্য থাকা
একান্ত প্রয়োজন। কারণ এই অত্যাবশ্যকীয় পদার্থগুলো আমাদের দেহে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে। নিচের ছকে এদের সাধারণ কাজগুলো দেওয়া হলো-

  • কঠিন কোষকলা, যেমন-হাড় ও দাঁত গঠন করে
  • রক্ত গঠন করে
  • হরমোন গঠনে সহায়তা করে
  • অভ্যন্তরীণ কাজসমূহ নিয়ন্ত্রণ করে

বিভিন্ন খনিজ পদার্থের অভাবের ফল

বিভিন্ন প্রকারের খনিজ লবণের অভাবে বিভিন্ন ধরনের অভাবজনিত লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন-

খনিজ পদার্থঅভাবজনিত রোগ
ক্যালশিয়ামক্যালসিয়ামের অভাবে শিশুদের রিকেট রোগ হয়, দাঁত ও হাড়ের গঠন ব্যাহত হয়।
শিশুদের রিকেট ও বড়দের ওস্টিওম্যালেসিয়া রোগ হয়।
সোডিয়ামরক্তচাপ কমে যায় ও পেশির দুর্বলতা দেখা দেয়।
পটাশিয়ামপেশির দুর্বলতা দেখা দেয়।
আয়োডিনগলগণ্ড রোগ হয়।
লৌহএনিমিয়া বা রক্ত-স্বল্পতা হয়।
জিংকশিশুদের বর্ধন ব্যাহত হয়।
কাজ ১- খনিজ লবণসমৃদ্ধ খাদ্য কেন গ্রহণ করা প্রয়োজন তা বর্ণনা করো।
Content added By
Promotion